দাঁত মাজার ব্রাশ মানুষের মুখ স্বাস্থ্য রক্ষার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র। প্রাচীনকাল থেকে নানা উপায়ে মানুষ দাঁত পরিষ্কার করার চেষ্টা করেছে। প্রাচীন সভ্যতাগুলোতে যেমন মিশর, চীন ও নোবেল আমেরিকার আদিবাসীরা গাছের ডাঁটা, পশুর লোম, এমনকি ছোট ছোট কাঠের ছড়া ব্যবহার করতো দাঁত মাজার জন্য। এই প্রক্রিয়াটি ছিল সীমিত এবং অব্যবস্থাপনা মূলক।
১৮ শতকের শেষ ভাগে আধুনিক টুথব্রাশের ধারণাটি প্রকাশ পাওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন। ১৭০০-এর শেষের দিকে চীনে পশুর লোম দিয়ে প্রথম টুথব্রাশ হস্তগত ছিল, যা বায়বীয় সুতা বা বাঁশের ডাঁটা দিয়ে তৈরী হতো। ১৭৮০ সালে ইংল্যান্ডে জন অ্যাডসনকে টুথব্রাশ আবিষ্কারের পিতৃপুরুষ হিসেবে ধরা হয়। তার পরে আমেরিকার অ্যাসা সি. কেন্ডল ১৮৩০ সালের প্রতিবেদন দিয়ে দাঁত ব্রাশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখেন।
১৮৩০ সালের দশকে প্লাস্টিকের আবিষ্কার এবং ভিক্টোরিয়ান যুগে দাঁত মাজার ব্রাশের ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়। ১৮৫৭ সালে ড্যানিয়েল ব্রাদলির প্রথম মালয়েল ব্রাশের পেটেন্ট পান। প্লাস্টিকের আবিষ্কারের পর ১৯৩৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম আধুনিক প্লাস্টিক ব্রাশ বাজারে আসে। এর ফলে দাঁত ব্রাশ সহজলভ্য এবং ব্যাপক জনপ্রিয় হয়।
বাজারজাতকরণের জন্য বিভিন্ন কোম্পানি ব্র্যান্ড তৈরি করে আধুনিক ডিজাইনসহ টুথব্রাশ বিক্রি শুরু করেন। প্রথমদিকে হাতের কাজের ব্রাশ ছিলো, পরে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে ইলেকট্রনিক টুথব্রাশ এসে যায়, যা শক্তিশালী রিচার্জযোগ্য ব্যাটারিতে চলে এবং অধিক কার্যকর।
বর্তমানে টুথব্রাশের বাজার ব্যাপক এবং বহুমুখী। সাধারণ মানুষের মাঝে দাঁত ব্রাশের গুরুত্ব বেড়ে গিয়েছে। স্বাস্থ্য সচেতনতার সঙ্গে অসংখ্য ব্র্যান্ড প্রতিযোগিতামূলক দাম ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে বাজার দখল করছে। দাম সাধারণত ৫০ টাকা থেকে শুরু হয়ে ইলেকট্রনিক ব্রাশের ক্ষেত্রে হাজার হাজার টাকায় উঠে যায়। আধুনিক টুথব্রাশে রয়েছে নানা বিশেষ ফিচার, যেমন সফট ব্যাসিল, রিপ্লেসেবল হেড, আর্থোডোন্টিক ডিজাইন ইত্যাদি যা দাঁতের যত্নে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
দাঁত ব্রাশের উন্নতি ও চাহিদা মানুষের জীবনে মুখ স্বাস্থ্য রক্ষার গুরুত্বের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে। বর্তমানে গোটা বিশ্বে দাঁত ব্রাশ ব্যবহারের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশেষ করে উন্নত দেশের পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশে ও। এই অব্যাহত ক্রয়ে দাঁত স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অনেক রোগ প্রতিরোধে সহায়তা পাচ্ছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন