![]() |
ড্যাফোডিল ক্যাম্পাস |
২৭ সেপ্টেম্বর শনিবার, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্যের কার্যালয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে আশুলিয়ায় অবস্থিত পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। এই সভার মূল উদ্দেশ্য ছিল আশুলিয়াকে একটি “উচ্চশিক্ষার শহর” হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সম্মিলিতভাবে কাজ করার অঙ্গীকার গ্রহণ।
সভায় অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো—ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, সিটি ইউনিভার্সিটি এবং এশিয়ান ইউনিভার্সিটি। উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রারগণ।
আলোচনায় উঠে আসে একাডেমিক সহযোগিতা, গবেষণা কার্যক্রমে সমন্বয়, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ, এবং সরকারি ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগ স্থাপন। অংশগ্রহণকারীরা মত দেন যে, শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা অপরিহার্য।
একাডেমিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত হয়, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স, ফ্যাকাল্টি, এবং রিসোর্স শেয়ার করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জন্য আরও সমৃদ্ধ শিক্ষার সুযোগ তৈরি করা হবে। যৌথ গবেষণা প্রকল্প, সেমিনার, এবং কনফারেন্স আয়োজনের মাধ্যমে গবেষণার মান উন্নয়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। লাইব্রেরি, ল্যাবরেটরি এবং অন্যান্য একাডেমিক রিসোর্স যৌথভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে খরচ কমানো এবং কার্যকারিতা বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সভায় পরিবেশ ও অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পায়। আশুলিয়ার সড়ক যোগাযোগ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, এবং পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অংশগ্রহণকারীরা মত দেন, শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হলে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি।
সভা শেষে অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, যার মাধ্যমে ভবিষ্যতে যৌথ কার্যক্রম বাস্তবায়নের পথ সুগম হবে। এই MoU-এর মাধ্যমে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করবে এবং একটি যৌথ কমিটি গঠন করা হবে যারা এই উদ্যোগের বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ করবে।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য বলেন, সম্মিলিতভাবে কাজ করলে আশুলিয়াকে একটি আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষানগরী হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। এই উদ্যোগ শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, পুরো সমাজের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।
সিটি ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার বলেন, শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য এই সমন্বয় সভা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য বলেন, শিক্ষা শুধু একটি প্রতিষ্ঠানভিত্তিক বিষয় নয়, এটি একটি সামাজিক আন্দোলন। আমরা একসাথে কাজ করলে আশুলিয়া হয়ে উঠবে দেশের অন্যতম শিক্ষাকেন্দ্র।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, প্রতি তিন মাস অন্তর এই পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা একত্রিত হবেন এবং অগ্রগতি মূল্যায়ন করবেন। যৌথ কমিটি প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান করবে এবং বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করবে।
এই সম্মিলিত উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এটি শুধু শিক্ষার প্রসার ঘটাবে না, বরং স্থানীয় অর্থনীতি, পরিবেশ, এবং সামাজিক কাঠামোতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ভবিষ্যতের জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করবে, যা বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
এই সভা আশুলিয়ার উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির পাশাপাশি একটি শিক্ষাবান্ধব নগরী গঠনে সহায়ক হবে।
সমন্বয় সভার মাধ্যমে যে অঙ্গীকার ও পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে, তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আশুলিয়া শুধু একটি শিক্ষাকেন্দ্র নয়, বরং একটি উদাহরণ হয়ে উঠবে যেখানে শিক্ষা, গবেষণা, এবং সামাজিক উন্নয়ন একসাথে এগিয়ে যায়।
![]() |
ক্যাম্পাসে বৈঠক |