আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রচারের জন্য বিজ্ঞাপন দিন

খাগান গ্রামে ‘মৃন্ময়ে’র দোকান: ছাত্রদের আড্ডা আর খাবারের নতুন ঠিকানা

উদ্বোধন ব্যানার !

সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের অন্তর্গত খাগান গ্রামে অবস্থিত সিটি ইউনিভার্সিটির একদম কাছেই সম্প্রতি যাত্রা শুরু করেছে নতুন খাবারের প্রতিষ্ঠান— 'মৃন্ময়ে'র দোকান'। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সন্নিকটে এর অবস্থান হওয়ায় এটি দ্রুত ছাত্র-ছাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য এক পরিচিত এবং নির্ভরযোগ্য স্থানে পরিণত হয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই দোকানটি খোলা থাকে এবং এখানে আগত অতিথিদের জন্য রয়েছে এক পরিচ্ছন্ন ও আরামদায়ক পরিবেশ। ভেতরের সজ্জা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে গ্রাহকরা স্বচ্ছন্দ্যে বসে খাবার উপভোগ করতে পারেন এবং নিজেদের মধ্যে আলাপচারিতায় মগ্ন হতে পারেন। সকালের ক্লাস শুরুর আগে থেকে শুরু করে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত এখানে মানুষের আনাগোনা দেখা যায়। চায়ের কাপে চামচের টুংটাং শব্দ আর মৃদু গুঞ্জনে জায়গাটি সারাক্ষণই জীবন্ত থাকে। দোকানের কর্মচারীদের আন্তরিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার গ্রাহকদের অভিজ্ঞতায় একটি ইতিবাচক মাত্রা যোগ করে, যা অনেককেই বারবার ফিরে আসতে উৎসাহিত করে। 'মৃন্ময়ে'র দোকান'-এর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো এর খাবার তালিকা বা মেন্যু, যেখানে বাঙালি ঐতিহ্যবাহী খাবার এবং আধুনিক ফাস্টফুডের চমৎকার মিশ্রণ ঘটেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, এই প্রতিষ্ঠানের সকল খাবারের দাম রাখা হয়েছে সাধারণ মানুষের এবং বিশেষত ছাত্র-ছাত্রীদের সাধ্যের মধ্যে। মেন্যুর প্রধান অংশে রয়েছে সকালের নাস্তা বা দুপুরের খাবারের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় কিছু পদ। এখানে পাওয়া যাচ্ছে সুস্বাদু ডিম খিচুড়ি (৫০ টাকা) এবং মুরগী খিচুড়ি (৭০ টাকা)। গরম গরম ধোঁয়া ওঠা খিচুড়ি পরিবেশন করা হয়, যা ঘরোয়া স্বাদের এক সতেজ অভিজ্ঞতা দেয়। ভারি খাবারের তালিকায় আরও রয়েছে মুরগীর বিরিয়ানি (৯০ টাকা), যার চমৎকার সুগন্ধ এবং অতুলনীয় স্বাদের জন্য এটি অনেকের কাছে একটি বিশেষ আকর্ষণ। যারা হালকা নাস্তা পছন্দ করেন, তাদের জন্য রয়েছে এক অসাধারণ কম্বো— পোড়া রুটি এবং মালাই চা (৩০ টাকা)। কাঠকয়লার মৃদু আঁচে সেঁকা রুটির পোড়া পোড়া গন্ধের সাথে ঘন দুধের সর দেওয়া মিষ্টি চায়ের এই মিশ্রণ একটি ক্লাসিক নাস্তার অভিজ্ঞতা দেয়, যা অনেকের শৈশবের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। আধুনিক খাবারের প্রতি আগ্রহীদের জন্য মেন্যুতে যুক্ত করা হয়েছে টিকা বার্গার (৫০ টাকা) এবং সাধারণ বার্গার (২০ টাকা)। প্রতিটি বার্গারই তাজা बन এবং মানসম্মত উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হয়। এছাড়াও রয়েছে মুখরোচক চিপস ককটেল (৫০ টাকা), যা বিভিন্ন সস আর মসলার তৈরি একটি ভিন্নধর্মী খাবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার সময় খাওয়ার জন্য খুবই উপযোগী। পানীয়ের মধ্যে এই দোকানটি তার বিভিন্ন ধরনের চায়ের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। চা-প্রেমীদের জন্য এখানে অনেকগুলো বিকল্প রয়েছে। সাধারণ রঙ চা (১০ টাকা) এবং মালাই চা (২০ টাকা) তো আছেই, তবে বিশেষ চায়ের মধ্যে রয়েছে গুড়ের মালাই চা (৩০ টাকা), যা দেশি গুড়ের মিষ্টি গন্ধ আর দুধের সরের মিশ্রণে তৈরি এক বিশেষ পানীয়। এটি যেন গ্রামবাংলার শীতের সকালের এক উষ্ণ আমেজ নিয়ে আসে। এছাড়াও, রাজা চা (৩০ টাকা) এবং মাল্টা চা (১৫ টাকা) এর মতো নতুন স্বাদের চা গুলিও এখানে পাওয়া যায়। এলাচ, লবঙ্গ এবং আদার মতো নানা দেশীয় মসলার এক বিশেষ মিশ্রণে রাজা চা তৈরি হয়, যা শরীর ও মনকে সতেজ করার জন্য অত্যন্ত কার্যকর। চায়ের এতগুলো বিকল্প থাকায় গ্রাহকরা তাদের পছন্দমতো পানীয় বেছে নিতে পারেন এবং প্রতিদিন নতুন স্বাদের অভিজ্ঞতা লাভ করেন। এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি খাবারই সতেজ উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হয় এবং পরিবেশনের সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ নজর রাখা হয়, যা স্বাস্থ্য সচেতন গ্রাহকদের কাছে অত্যন্ত প্রশংসিত একটি বিষয়। প্রতিটি টেবিল ব্যবহারের পর পরিষ্কার করে দেওয়া হয় এবং সামগ্রিক পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে কর্মীরা সর্বদা সচেষ্ট থাকেন। খাবার অর্ডার করার পর খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয় না, যা ব্যস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একটি বড় সুবিধা। এই উদ্যোগটি স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে এবং এলাকার মানুষের জন্য একটি নতুন সামাজিক মিলনস্থলের সুযোগ করে দিয়েছে। অল্প সময়েই দোকানটি শুধু একটি খাবারের জায়গা হিসেবে নয়, বরং খাগান এলাকার ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। এর সুবিধাজনক অবস্থান, খাবারের বৈচিত্র্য এবং সহজলভ্য মূল্য এটিকে দ্রুত জনপ্রিয় করে তুলেছে। এই দোকানটি কেবল খাবারের চাহিদা মেটাচ্ছে না, বরং ছাত্র-ছাত্রীদের দৈনন্দিন জীবনে আড্ডা ও আরামের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।


       ফেসবুক পেজ ভিজিট করুন

খাবারের মেনু 


নবীনতর পূর্বতন